ইংলিশ ফুটবল ক্লাব চেলসির সাবেক মালিক রোমান আব্রামোভিচের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার হুমকি দিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। ক্লাব বিক্রির ২.৫ বিলিয়ন পাউন্ড ইউক্রেনের মানবিক সহায়তায় ব্যয় করতে চাপ দিচ্ছে তারা। সোমবার (৩ জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি নিউজ।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর যুক্তরাজ্য আব্রামোভিচকে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। এরপর তিনি চেলসি ক্লাব বিক্রি করতে বাধ্য হন, তবে শর্ত ছিল—তিনি এই বিক্রির অর্থ থেকে কোনো আর্থিক লাভ নিতে পারবেন না।
বর্তমানে ক্লাব বিক্রির অর্থ একটি ব্রিটিশ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আটকে আছে। তবে তহবিলটি কীভাবে ব্যয় হবে, সে বিষয়ে আব্রামোভিচের আইনজীবীদের সঙ্গে ব্রিটিশ সরকারের মতবিরোধ চলছে।
চ্যান্সেলর র্যাচেল রিভস ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা এই অর্থ ইউক্রেনের মানুষের কল্যাণে দ্রুত বরাদ্দ করতে চাই। আলোচনা এখনো চলমান, তবে প্রয়োজনে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হব।’
সরকারের অবস্থান স্পষ্ট—এই অর্থ শুধুমাত্র রাশিয়ার অবৈধ আগ্রাসনের শিকার ইউক্রেনের জনগণের জন্য বরাদ্দ হবে।
অন্যদিকে, রোমান আব্রামোভিচের দাবি, এই অর্থ ইউক্রেন ও রাশিয়া—উভয় দেশের যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য ব্যয় করা উচিত।
এই দাবি যুক্তরাজ্য প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বলছে, শুধুমাত্র ইউক্রেনের ভেতরে মানবিক সহায়তা কার্যক্রমেই এই অর্থ খরচ করা হবে।
গত বছর হাউস অফ লর্ডসের একটি কমিটি একে 'বুঝতে অক্ষম' পরিস্থিতি হিসেবে আখ্যায়িত করে। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এই বিশাল অঙ্কের তহবিল এভাবে নিষ্ক্রিয় থাকা ব্রিটিশ সরকার ও আব্রামোভিচ—উভয়ের জন্যই বিব্রতকর।’
রাশিয়ান তেল ও গ্যাস খাতে সম্পদশালী আব্রামোভিচকে প্রেসিডেন্ট পুতিনের ঘনিষ্ঠ বলে অভিযোগ রয়েছে, যদিও তিনি তা অস্বীকার করেন।
বর্তমানে ২.৫ বিলিয়ন পাউন্ডের তহবিলে আব্রামোভিচের কোনো হাত নেই, তবে আইনগত মালিকানা এখনও তারই। এর আগেও বিলম্বিত বিতরণ ও অস্পষ্ট প্রতিশ্রুতির অভিযোগে তাকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে।
ব্রিটিশ সরকার যদি আইনি পথে অগ্রসর হয়, তবে এটি হতে পারে একটি দীর্ঘ ও জটিল আইনি লড়াই। তবে সরকারের লক্ষ্য একটাই—এই অর্থ যেন পৌঁছে যায় যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের মানুষের কাছে।